উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজের লৌকিক কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি-একটি পর্যালোচনা: কৃষ্ণেন্দু রায়
ভারতবর্ষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি যুগ যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্বাক্ষর বহন করছে। ধর্মীয় বিশ্বাসের দিক থেকে ভিন্নতা থাকলেও এ দেশের হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সুদৃঢ় সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ। তাই ভারতের মিশ্র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আজও সমান প্রাসঙ্গিক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বলতে বোঝায় এমন এক সহাবস্থান যেখানে সব ধর্মের মানুষ মিলে মিশে থাকে, যেখানে ধর্ম নিয়ে কোনো হিংসার যুদ্ধ চলে না, কোনো ধর্মের মানুষ কোনো ধর্মকে ছোটো করে দেখে না। যেখানে সব ধর্মের মানুষ সবাই সবার বন্ধু।
উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি মূল্যায়ন করলে ফুটে ওঠে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অপরূপ রূপ। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির মধ্যে নিহিত হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির ভাবাবেগ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি লুকিয়ে রয়েছে রাজবংশী সমাজের প্রায় হারিয়ে যাওয়া কৃষ্টির মধ্যে। রাজবংশী সমাজের লোককৃষ্টির পর্যালোচনা করলে ও গভীরভাবে অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, এই সমাজ সারা বছর পূজা পার্বণ ও লোকাচার নিয়েই মত্ত থাকে। এই পূজা-পার্বণের মধ্যেই বিশেষভাবে লক্ষ করার বিষয় হল রাজবংশী সমাজের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা।
গ্রামের যেকোন পূজা, অর্চনা হলেই দেখা যায় ‘গ্রাম ঠাকুরের সেবা’। এই গ্রাম ঠাকুরের অর্চনায় থাকে লৌকিক বিভিন্ন দেব দেবী। গ্রাম ঠাকুরের বিভিন্ন লৌকিক দেব দেবীর মধ্যে একটি বিশেষ উল্লেখ্যযোগ্য আরাধ্য দেবতার নাম ‘পীর বাবা’। পীর কথাটি ‘ফরাসী’শব্দ, এর অর্থ দীক্ষাগুরু। ভারতের সাম্প্রদায়িক সমন্বয়ের ঐতিহ্য এই পীর বাবার অর্চনা।
উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ভাবে পীর বাবার অর্চনা করা হয়। সাধারণত পশ্চিম মুখে পীরের থান থাকে। পীর উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় উত্তরবঙ্গের যেসব পীরের কথা জানা যায় সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল-– সত্য পীর, মানিক পীর, খোয়াজা পীর, মাদার পীর, পাগল পীর, পাগলী পীর, তোর্ষা পীর, মাওলানা শাহ সুফী পীর, খন্দকার এক্রামুল হক, পাঁচ পীর, পীর ফজলে রব্বি বাবা মস্তান পীর প্রমুখ। এ ছাড়াও অনুসন্ধানে আরো পীরের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।
উত্তরবঙ্গে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির সমন্বিত যে সকল পূজা-অর্চনার কথা আলোকপাত করা হয় তার মধ্যে সত্য পীর অন্যতম। হিন্দু-মুসলিম সকলে মিলে এক সাথে সত্যপীরের গান (পালা) শোনে। সত্য পীরের অর্চনা প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। কোন বাড়িতে অসুখ-বিসুখ, মামলা-মোকদ্দমা, গ্রহের অশুভ স্থানে অবস্থান ইত্যাদি চলতে থাকলে সত্যপীরের ফকিরকে এনে পূজা দেওয়া হয়। [১] হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিরাই ফকির হয়ে থাকেন। এই পূজায় কোন মন্ত্রের ব্যবহার দৃষ্ট হয় না। রাজবংশী সমাজের বিশ্বাস ফকিরের অর্চনা করলে সত্যপীর সন্তুষ্ট হন এবং বিপদ থেকে উদ্ধার করেন। দ্বিতীয়ত মনোবাঞ্ছার জন্য অর্চনা অর্থাৎ বিশেষ কার্যসিদ্ধির জন্য ‘মানষা’ থাকলে এই সত্য পীরের পূজার ব্যবস্থা করা হয়। এই পূজা বছরের যেকোন সময়েই হতে পারে। বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য এর মন্ত্রের মধ্যেও হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির উপস্থিতি দেখা যায় ।
যেমন ঘট বসা মন্ত্র—
খোল বলে ধিয়া ধিয়া
মন্দির ছারে রাও।
ফেন্নার ঘরত থামনুই করেছু
রৈখ্যা কর সোরস্বতী মাও।[২]
এই মুসলিম দীক্ষাগুরুকে রাজবংশী সমাজ অন্তর থেকে অর্চনা করে আসছে।
রাজবংশী সমাজে মানিক পীরের নামে গরু মানত করে। কারো বাড়িতে গরু জন্ম হলে ৭ দিন বা ২১ দিন গরুর দুধ মানিক পীরের নামে নিবেদন করা হয়। মানিক পীরের গানে হিন্দু-মুসলিম মিলে এক হয়ে যায়। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজ ভাদ্র মাসের যেকোন বৃহস্পতিবার খোয়াজ পীরের বেরাভাসা অনুষ্ঠান করে। রাজবংশী কৃষ্টির মধ্যে ভক্তি আর ভালোবাসা এক সম্প্রীতির বন্ধনে বেঁধে রেখেছে উত্তর-পূর্ব ভারতের জনসমাজকে।
উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজের পূজা-পার্বণে বিশেষ গুরুত্বের দাবীদার ‘পাগলা পীর’ ও ‘পাগলী পীরের' অর্চনা। উত্তরবঙ্গের তরাই ডুয়ার্সের গ্রাম থানে এই পাগলা ও পাগলী পীরের থান দেখা যায়। সারা বছর বিভিন্ন সময় ‘পাগলা পীর’ এর পূজা হলেও বিশেষ করে ধান কাটা শেষ হলে, ছোট ছোট শিশুরা দল বেধে বাঁশের কঞ্চিতে বা বাঁশের ঠালে পাটের ফুল বানিয়ে তাকে লাল পুঁই শাকের বীজ দিয়ে লাল রঙ করে বাড়ি বাড়ি যায় আর ভিক্ষা বা মাঙন আদায় করে। আর গান করে—
‘হুকা করে টোরোৎ, টোরোৎ
ছিলিমের পুটকিৎ ছাই
এই বাড়িত ভিক্ষা পাইলে
অন্য বাড়িত যাই’।......‘পাগলাপীর নমসতুতে বুলালালা...’
প্রাচীন কাল ত্থেকে রাজবংশী সমাজ আপন করে নিয়েছে সম্প্রীতির চেতনাকে। শৈশব থেকেই এই জনসমাজের চেতনার মধ্যে জাগ্রত হয় নিজের ধর্মের পাশাপাশি সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা যা মানবসমাজে সম্প্রীতির এক অমূল্য ভাবাদর্শ। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন পীর পাঁচালির কাব্য, যার অধিকাংশই অলিখিতভাবে রয়েছে। বর্তমান সমাজের সামাজিক অবক্ষয়, মানবতার অবনমন, সাম্প্রদায়িক সমস্যা, সাংস্কৃতিক অবক্ষয় বন্ধ করতে হলে এই ধরনের হিন্দু-মুসলিম সাংস্কৃতিক সমন্বয়ের পীর পাঁচালি কাব্য মানব সমাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজবংশী সমাজের মদনকাম অনুষ্ঠানটির আরেক নাম বাশঁ পূজা। এই অনুষ্ঠানে এক একটি বাশঁ এক একটি বিশেষ দেবতার প্রতীক রূপে মান্য করা হয়। মদন কাম পূজায় (বাঁশ খেলায়) যে বাঁশ নিয়ে অর্চনা কর্রা হয় সেইখানে সমস্ত দেবতার নামে একটি করে বাঁশ, অর্চনা করা হয় তারমধ্যে একটি বাঁশ থাকে ‘মাদার পীরের’ নামে। যিনি হিন্দু মুসলিম সকল সম্প্রদায়ের আরাধ্য। এই বাঁশ খেলাতেও রাজবংশী সমাজের কৃষ্টিতে, হিন্দু-মুসলিম মিলনের একটি চিত্র ফুটে ওঠে ।
রাজবংশী সমাজে যমজ বাঁশে সত্যপীর পূজা। বাঁশঝাড়ের মালিক এই পূজা করেন। পূজার পূজারি হলেন একজন পীর। পুজো শেষে যমজ বাঁশটিকে কেটে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে রাখা হয়, সেখানেও পূজাপর্ব চলে। এরপর সত্যপীরের গান ও পূজা করা হয়। সত্যপীর হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের আরাধ্য দেবতা। সত্যপীরের মাঝেই আছে হিন্দু মুসলমান পরিচয়, সত্যপীরের মাঝেই আছে দুই সম্প্রদায় রাজবংশী ও নস্যশেখদের আত্মপরিচয়, ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন।[৩]
জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দার্জিলিং জেলায় অপদেবতার কুদৃষ্টি এড়াবার জন্য পথের পাশের কুল, তেঁতুল, শেওড়া, পাকুড়, জিগা প্রভৃতি গাছকে উপাসনা করা হয়। পথচারীরা শুষ্ক ঘাস বা খড়-কুট দিয়ে জুড়া বা বিড়ার মত বস্তু গাছের ডালে বেঁধে দেন, অথবা টাকা, বাতাসা ছুড়ে দিয়ে সেই পীর দেবতার অর্চনা করে। দেবতাদের নামের সাথে পীর শব্দ যুক্ত হয়, যেমন জুনী পীর, শোটা পীর, ধকরপীর, সোনিয়াপীর প্রমুখ। এই পীর ঠাকুরের থানগুলিও রাজবংশী সমাজের অন্তরের আত্মীয়। যা বার্তা বহন করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির। [৪]
প্রকৃতি আর ধর্ম সমন্বয়ের অন্যতম নিদর্শন রাজবংশী সমাজের "যাত্রা পূজা"। এদিন কৃষির যন্ত্রপাতি থেকে বইপত্র সবকিছুকেই একদিনে পূজা দেওয়া হয়। ঠাকুরকে ফুল জলের সাথে যাত্রাসী গাছের পাতা দিয়ে সন্তুষ্ট করা হয়। প্রয়োজন হয় না কোনো মূর্তির, ভক্তের নিগূঢ় ভক্তিই এখানে প্রাধান্য পায়। খড়িমাটির ফোঁটা পরানো হয় বলদ গোরু আর সিঁদুরের ফোঁটা গাভীদের। সেই সাথে পশ্চিম দিকে পূজা দেওয়া হয় "পীর(বাবা) পয়গম্বর"কে। দুধ কলা আর পান, জল দিয়েই সন্তুষ্ট হয়ে ধর্ম সমন্বয় অক্ষত রাখেন পীরবাবা। [৫]
রাজবংশী সমাজের মিলনের কৃষ্টি, সমন্বয়ের কৃষ্টি হল ‘মিস্তর ধরা’, ‘সখা হাল’, ‘ভাদাভাদি’। বিয়ে হবার সময় রাজবংশী সমাজে পুরুষ বা যুবক 'মিস্তর' ধরে অর্থাৎ লৌকিক পার্বনের মাধ্যমে, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, সাংস্কৃতিক ভাবে বন্ধুত্ব পাতায়। রাজবংশী সমাজ ছাড়াও অন্যান্য যেকোন সম্প্রদায়ের মানুষ বন্ধু বা মিস্তর বা সখা হতে পারে। ‘সখাহাল’ উৎসবেও কোনো জাতি বিচার মানা হয় না। এই পার্বন অনুযায়ী দুই জন বা তারও বেশি ছেলে ‘সখা’বা বন্ধু হতে চাইলে অধিকারী বা রাজবংশী পুরোহিত ডেকে সখা পাতা হয়। রাজবংশী সমাজের মানুষের রীতিনীতি অনুযায়ী এক এক জনের একাধিক ‘সখা’র সাথে একজন মুসলিম ‘সখা’ বা বন্ধু আবশ্যক; এই রকম আচারও তরাই ডুয়ার্সের বিভিন্ন রাজবংশী জনগোষ্ঠী অঞ্চলে দেখা যায়। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ‘সখী’ বা বান্ধবী করতে হলে তাকে বলা হয় ‘ভাদাভাদি’। সম্প্রীতির এত নির্মল ভাবাবেগ ও পরস্পর জনগোষ্ঠীর মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধনে বেঁধে থাকার এই ধরনের দুর্লভ চিত্র রাজবংশী সমাজের এক অমূল্য কৃষ্টি।[৬]
হিন্দু-মুসলিম কৃষ্টির সমন্বয়ের কথায় আলোকপাত করতে হয় এই সমাজের বিভিন্ন মন্ত্র বা ‘মন্তর’ গুলোর কথা। যেই মন্ত্রগুলিতে বলা রয়েছে হিন্দু দেবীর সাথে আল্লা, খোদার কথা।
যেমন একটি মন্ত্র—
(বাড়ি বান্ধা বা বাঁধা মন্ত্র)
“আগে শঙ্কর পিছে গৌরি
সর্ব্ব লোকে বলে হরি
মোর এই বাড়িত যায় দিবে পাও
ঈশ্বর মহাদেবের মাথা খাও
দোহাই সেলেমান পয়গম্বরে
অঙ্কুরির ভিতর দিইয়া যাও।”
মন্ত্রটিতে শিব গৌরি, হরি এবং সেলেমান নবীর নামে অশুভ আত্মাকে ভয় দেখানো হয়েছে। এখানে হিন্দু দেবতার সাথে সেলেমান নবীর কথা বলা হয়েছে।[৭]
রাজবংশী সমাজের ভাওয়াইয়া গান উত্তরের প্রাণ, এই গান এক আত্মা সবাই মিলে গায়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ একত্র হয়ে সবার প্রানের গান ভাওয়াইয়া। এই ভাওয়াইয়া গানে ভেসে আসে সম্প্রীতির বার্তা—
“আমরা......
আমরা সগায় সমান
এই দেশের মানষি আমরা সগায় সমান
আমরা জাতিভেদ মানি না।
হিন্দু মুসলিম মানি না।
এই মাটির মানষি আমরা সগায় সমান।”
রায় সাহেব মনীষী পঞ্চানন সমাজের প্রতি বার্তা দিয়েছিলেন তার ‘ডাং ধরি মাও’ কবিতায়—
“হিন্দু মুসলমান বিচার নাই রে, মানুষ জন্তু নয় ভিন,
উলসি ধায়া আর্ত্তের উদ্ধার, এই ক্ষত্রিয়ের চিন্।।” [৮]
রাজবংশী সমাজ বিশ্বের সম্প্রীতির একটা উজ্জ্বল নিদর্শন। রাজবংশী সমাজের অন্তর আত্মার মধ্যে সম্প্রীতি যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে। এক সাথে কি করে ভিন্ন ভিন্ন জাতিসত্তা এক দেহে ভালোবাসার সাথে বসবাস করে, কি করে এক সাথে, এক গানে, এক অর্চনায়, একভাবে এক স্বপ্ন দেখা যায়, রাজবংশী সমাজ এর এক অমূল্য নিদর্শন। তাই আমরা বলতে পারি কৃষ্টির দিক থেকে সম্প্রীতির অন্য নাম— ‘রাজবংশী’সমাজ। তবুও কখনও কখনও মানুষ তার মনুষ্যত্ববোধ একবারেই ভুলে যায়। কিছু মানুষ নিজেই তার জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের বিভেদ সৃষ্টি করছে। মানুষ ঐক্যের আদর্শ ভুলে লোভ, হিংসা, পরমত অসহিষ্ণুতা, মৌলবাদী সংকীর্ণ স্বার্থ চিন্তার কারণে সংঘর্ষ আর রক্তক্ষয়ী হানাহানিতে মেতে উঠেছে যার ফলে অকালে ঝরে পড়ছে হাজার হাজার প্রাণ, ঐক্য ও সংহতির উপর পড়ছে চরম আঘাত।
জাতীয় সংহতি বিপন্নের অন্যতম কারণ সাম্প্রদায়িকতা যা থেকে মানুষকে সুপথে নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। রাজবংশী সমাজ হয়ে উঠুক সম্প্রীতির পথ প্রদর্শক। বর্তমান ভারতবর্ষে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় হল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও মানবতার বাণী মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। তাই সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে সহজ সরল বার্তা— “সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।”
তথ্যসূত্র:
● ১) ড. গিরিজা শঙ্কর রায়, ‘উত্তরবঙ্গে রাজবংশী ক্ষত্রিয় জাতির পূজা-পার্বণ’, ১৯৭০,ন্যাশনাল লাইব্রেরি , নিউ মার্কেট ,ডিব্রুগর , আসাম। পৃষ্ঠা- ২১১
● ২) ড.বিশ্বজীৎ রায়, ‘উত্তরবঙ্গের পীর ও পীর সাহিত্য’, সোপান পাবলিশার্স, বি/৪১ গোষ্টতলা নিউ,স্কিম,পৃষ্ঠা-২৯
● ৩) ক্ষীরোদা রায়, লোকসংস্কৃতিবিদ, ১৩ ই মে ২০১৮, Facebook পোস্ট
● ৪) ড.গিরিজা শঙ্কর রায়, 'রাজবংশী ক্ষত্রিয় জাতির বৃক্ষপূজা’ , (কিরাত ভূমি জলপাইগুড়ি জেলা সংকলন (দ্বিতীয় খন্ড) সম্পাদক-অরবিন্দ কর) ২০১৩, সংস্কৃতি পাড়া, জলপাইগুড়ি পৃষ্ঠা- ৪৫০
● ৫) স্রাবস্তী রায়, ১৯ অক্টোবর ২০১৮, Facebook পোস্ট
● ৬) ড. গিরিজা শঙ্কর রায়, ‘উত্তরবঙ্গে রাজবংশী ক্ষত্রিয় জাতির পূজা-পার্বণ’, ১৯৭০, ন্যাশনাল লাইব্রেরি, নিউ মার্কেট, ডিব্রুগর, আসাম। পৃষ্ঠা- ২১১
● ৭) নাজমুল হক, উত্তরবঙ্গের লোকসাহিত্যের নৃতাত্বিক ও সমাজতান্ত্রিক সমীক্ষা, নয়া উদ্যোগ, ২০৬, বিধান সরনী, কোলকাতা-৭০০০০৬, ( ভারত) বাংলা একাডেমি ঢাকা, পৃষ্ঠা- ১২৩
● ৮)অরবিন্দ ডাকুয়া (২০১৫) রায় সাহেব পঞ্চানন বর্মা, প্রকাশক উত্তম কুমার মোদক, উপমহাদেশ, দক্ষিণ চেচাখেতা, আলিপুরদুয়ার পৃষ্ঠা-১১১
(চিত্র সংগ্রহ- চিত্র- ২-পার্থ প্রতীম রায়, ৩১ শে মার্চ ২০২১, ফেসবুক পোস্ট। চিত্র-৩- রতন চন্দ্র রায়, ফেসবুক পোস্ট, চিত্র-৬- ক্ষীরোদা রায়, ১৩ ই মে ২০১৮, ফেসবুক পোস্ট)
ভালো লাগলো আলোচনা
ReplyDeleteখুব সুন্দরভাবে ভাবে সম্প্রীতির বার্তাগুলি পরিবেশিত হয়েছে।শুধু রাজবংশীই নয়,এভাবেই ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় থাকুক প্রতিটি জনজাতির মধ্যেই।তাহলেই আমরা আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবো আমাদের সভ্যতা,কৃষ্টি আর সংস্কৃতির মেলবন্ধনকে।
ReplyDeleteখুব সুন্দর আলোচনা।গভীরে গিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে।কিন্তু দুখের বিষয় বর্তমানে একটি সাম্প্রদিক রাজনৈতিক দল তার বিষ রাজবংশী সমাজের সহজ সরল মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হচ্ছে,অনবরত ছড়িয়ে দিচ্ছে।এই প্রবন্ধ মধ্যে আসাম্প্রদায়িক যে দিক গুলো ফুটে উঠেছে তা আমরা শিশুকাল থেকে দেখে এসেছি। কিন্তু ভয় হয় হয় এই ভাবে রাজনৈতি ফায়দার লড়াইয়ে ময়দানে সহজ সরল সমস্ত মানুষজনকে যে ভাবে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে করে এই অসাম্প্রদায়িকতার যে মূলভাবনা তা আমরা আর কতদিন দেখতে পাব!
ReplyDelete