সম্পাদক কয়

 




সম্পাদক কয় 


নিরোর নগরকীর্তন ও তাহার নাগরবৃন্দ

 

বাঁশি না বীণা না বেহালা কী বাজাতেন নিরো?—কেউ হয়তো জানে ঠিকটা। বাদ্যযন্ত্রটা যদিও কথা না। কথাটা হলো নগরী পুড়ছিল, রোম। আর রাজা নিরো, রাজারা প্রায়শই যেমন হয়, প্রশাসকরা যেমন হয়—বিনোদনে ব্যস্ত থাকেন, মত্ত। প্রজা, গণজনেরও থাকে বিনোদন। হয়তো লোকগানে। কিন্তু সেই গানেরও আগে কিংবা গানেরই সাথে চলে রোজকার রোজগারের জন্যে হাত-পা-মাথা-শরীর। শ্রমের পর শ্রম। আমরা তাই শ্রমিক। কেউ অন্দরঘরে কেউ বাহিরে। হয়তো কেউ রাজারই অনুগত সেনানী। কিন্তু রাজারা প্রজাকে ভুলে গিয়ে যখন ওই বাঁশি না বীণা না বেহালা—বিনোদনে মত্ত তখন খোলা বাজারে মজুতদারি, মাৎসান্যায়, লাশের ওপর ভনভনিয়ে মাছি ওড়ে। কেউ কেউ তা দেখে। কেউ কেউ ভুলে যায়। কেউ সেই স্ক্রিনশট, ফসিলস গুহায় আঁকে, গায়, ম্যাগাজিনে ভরে। মাঝেমাঝে মনেহয় এমন একটা করে নিরো কেবল রাজভবনেই থাকে না, থাকে এই আমার মগজেও। মগজের নিকটজন সেই নিরোর বিহিত করতে পারি কি? ক’জনা পারি? কেউই কি পারি? আসলে দ্যাশ তো একটাই হওয়ার কথা, ছিলও—যে দ্যাশের নাম—দুনিয়া। একটাই দুনিয়া। আর তাতে রাজা নাই। ছিলও না। প্রজাও নাই। ছিলও না। নতুন করে সেই সুদিন কি আসবে আবারও? যখন স্ব-অধীন স্ব-নিয়ন্ত্রিত সকল আমি, সকল মানুষ।

 

চাও তো সেই অপার লীলায় ডুব দিতে পার হে তুমিও প্রিয়। এক চৌকশ ডুবুরির মতন। তারপর ডুব দিয়ে উঠে দেখ কোনো মহাজনের কথাই হয়তো সত্য— এইসব রাজা মিথ্যা, রাষ্ট্র মিথ্যা, সীমা-সরহদ্দ মিথ্যা, শাস্ত্র মিথ্যা, যত আসমানি ঈশ্বর-আল্লাহ্‌ মিথ্যা…সত্য এই অনন্ত আসমান আর তার নীচের সবুজ ঘাস, মাটি আর তার ফসল, নিজ দেহ আর দেহঘড়ি— তার হৃদয়পুর, আমাদের প্রেম। সত্য দ্রোহ, আগুন, লড়াই…  


রাহেবুল

১৯ মে, ২০২১      


No comments:

Post a Comment

ইবলিশ ৭ - নিরোর নগরকীর্তন ও তাহার নাগরবৃন্দ

  শিল্পী: জস এ. স্মিথ  সম্পাদক কয়  নিরোর নগরকীর্তন ও তাহার নাগরবৃন্দ বাঁশি না বীণা না বেহালা কী বাজাতেন নিরো?—কেউ হয়তো জানে ঠিকটা। বাদ্যযন্ত...